আমাদের বদভ্যাস
আমাদের বদভ্যাসের তালিকা তৈরি করে
হয় ছিঁড়ে ফেলি, নয় গেঁড়ে ফেলি কিংবা ভাসিয়ে দিই
কিংবা লুকিয়ে রাখি গোপনতম ঠোঁটে
ইউক্যালিপটাসের ঝরো পাতার মতো
জানিনা বলে বুঝিনা বলি, এগুলোও আদতে বদভ্যাস
আমাদের অট্টহাসে গোধূলিপাখি ডরে ডরে উড়ে যায়
দেখো আকাশ ধুয়ে দিচ্ছে পাপ-পৃথিবীতে গহীন কুয়াশা
ঢেলে ঢেলে
এক এক জায়গার অভিজ্ঞতা একেক জায়গায় বলে বেড়াই
গাছের মতো তো আর মৌন হতে পারি না
আমলকীর এইসব বৃক্ষ-মৌনতা ভালো
কেবল প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত করা কাউকে
এও আমাদের বদভ্যাসের একটি
দেখো পাপ ধোয় আকাশ অবুঝ কিশোরের মতো
পৃথিবীর গহীন বৃষ্টি ঢেলে ঢেলে
নততল
যেতে হলে কাঁপে আমার মাতাল পালক
ভয়ে না ভালোবাসায় জানি না
নিশ্চুপ থাকি নিটোল নস্টালজিয়া
নূপুর পায়ে ওই ঘরে যাও যদি
গুনে গুনে রাখি বৃক্ষতলে প্রহর, আর কিছু নয়
ফিরে ফিরে উপুড় করে রাখা আমাদের নততলীয় মুহূর্ত
আসলে তোমাকেই ভুলভাল ধরে রাখি
কঞ্জুস
শিখি নি বানরের কায়দানানুন আদবকৌশল
অমানুষ হয়তো তাই
কাছে যাই গন্ধ পাই
হাঁসের গলা শুনি
যেহেতু হাঁসেরা আমার বাল্যবন্ধু
ফিরিয়ে নাও দেয়া সুখগুলো তোমাদের
অর্থ নয়, মাংসের নাভি নয়, উপভোগও নয়
আঁকড়ে থাকবো – শিরোনামহীন ভালবাসা কঞ্জুস বুকে
গোত্রহীন অবাক আলোর মতো
গ্রামীণ অসদ্বিম্ব
তোমাকে নিয়ে অসংখ্যবার স্বপ্ন ভাঙলাম স্বপ্ন গড়লাম
রাত্রির হতাশ উল্কাপাতকে সর্বস্বসাথী করে তখনও তুমি দাঁড়িয়ে
রাত্রি মাপি আমি
তারে ক্ষমা করে দাও; রাত্রির ওজন বইতে যে অক্ষম অপারগ
রং আমাকে পূর্ণ নদীই করে দাও
নদীর সাথেই ভেসেই যাই
কালো রেখাপাত আকাশের বৃত্তপৃষ্ঠা ভরে যাক
আঙিনায় আজীবন প্রতীক্ষায় থাকো সৌখিন অর্কিডের মতো
এদিক ওদিক বিছিন্ন ঘুরে ফিরে আমি
পরিত্যক্ত স্বপ্ন নিয়ে পরিত্যক্ত ধ্বংসস্তূপের দিকে
আমাদের অসদ্বিম্ব আমাদের ব্যঙ্গ করে বিদ্রুপ করে
হলো তবে আমাদের এই অসদ্বিম্বের বয়স?
আজীবন রাত্রি মেপেও আমাদের অশ্রুপাতের মতো
শক্তি ও ভরের অবিনাশিতার মতো যা ক্ষয়হীন অফুরান
আমরা কেবল জড় পাঁজর, ক্ষয়ে যাই
এই লেখাটা শেয়ার করুন