বৃত্তসংহিতা
এক
বৃত্তের কেন্দ্রে থাকে প্রবল সন্ত্রাস
কেউ কেউ
এর মধ্যে
প্রবল উচ্ছ্বাস দেখতে পায়।
কেউ কেউ
বৃত্তের মধ্যে
দেখতে পায় বূহ্যের জাগরণ।
বৃত্ত
যতক্ষণ লোকালয় থেকে দূরে
ততক্ষণ ভালো।
পাড়ের বাঁধন
ছিন্ন হলেই
তার উন্মুক্ত উল্লাস
সবকিছু তছনছ করে দেয়।
বৃত্ত
যতক্ষণ বৃত্ত
গোষ্ঠীর আধার,
ততক্ষণই ভালো।
দুই
জীবন মৃত্যুকে নিয়ে পথ চলতে পারে।
তবু,
বৃত্তকে নয়।
বৃত্তের মধ্যে থাকে
আলের শাসন।
প্রকৃত কৃষক
আল নয়,
খেত ভালোবাসে।
মাটি কিন্তু আল চায়নি,
চেয়েছিল দ্বিগুণ ফসল।
তিন
তুমুল মাঠের মধ্যে
ঘূর্ণির পক্ষপাতে
কারো কারো রেতঃস্খলন হয়।
রাত জাগার ক্লান্তি
কারো কারো সহ্য হয়না।
তারা দিবানিদ্রার জন্যে
স্লিপিং পিল খোঁজে।
আসলে ঘুম নয়।
চোখে জল দিয়ে
এসময় জেগে থাকার মধ্যে
কেউ কেউ দেখে
ক্ষয়।
চার
প্রকৃত প্রতিবিম্ব
সব আয়না দিতে পারে না।
প্রকৃত প্রতিচ্ছবি যেমন
সব লেন্সে সমান আসে না।
যারা লেন্স বানায়,
আয়না যারা তৈরি করে,
তারা কেউ আসল কারিগর নয়।
প্রকৃত কারিগরেরা
কবেই জলে ডুবেছে।
জল এতই অধীর,
এত অপ্রস্তুত ও অনচ্ছ,
গাছের ছায়া আঁকতেও
তার হাত কেঁপে যায়।
স্থিরতার
এবং স্বচ্ছতার
সাধনা যারা করত
তারা এখন
রোজ রাতে
বারের নর্তকীর কাছে
ভিখিরির মতো
হাত পেতে দাঁড়ায়।
পাঁচ
যখন শূন্যতার দিকে তাকাই
দেখি এক অলস যুবতি
ঘড়া ভর্তি জল নিয়ে
ঘরের দিকে যাচ্ছে।
পূর্ণ যৌবন যেমন
ঘড়াকে ব্যঙ্গ করে,
পেছনে পড়ে থাকা
সৃষ্টিপথের কথা ভুলে যায়,
ওই যুবতিরও নদীর কথা মনে থাকে না।
যুবতি জানে না
ওই ঘড়া আসলে শূন্যের প্রতিবিম্ব
দম্ভের দেহ-ছন্দে ভরা।
ছয়
যারা প্রকৃত মদ খায়
তারা শূন্য বোতলের দুঃখ বোঝে না।
কী যে অসীম ক্লান্তি নিয়ে
বাকি জীবন কাটাতে হয়
নেশার তো এই এক দোষ।
ঋণগ্রস্ত ইন্দ্রিয়ের যাতনা
তার মনে থাকে না।
সাত
ঝুরির সাফল্য
সবসময়
গুঁড়িকে ব্যঙ্গ করে।
বেচারা গুঁড়ি কি ঝুরির সঙ্গে পারে!
তার তেমন লোকবল কই,
প্রচারের মানুষ কই,
মিডিয়ার স্নেহ কই!
গুঁড়ি মাটির গভীরে
কান্না জমা করে রাখে।
মাটিও আকাশ-দাক্ষিণ্যে
সমস্ত আকুলতা চারিদিকে ছড়িয়ে দেয়।
এই লেখাটা শেয়ার করুন