কবিতা

ঈশানকোণ একটি সাহিত্যের ওয়েবজিন বইমেলা সংখ্যা ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ইং 

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]

মাধব বণিকের চারটি কবিতা 

হেমন্তে


চাদরমুড়ি দিয়ে বাতাসে উড়ে যাচ্ছে নামহীন পাখি

তার দোলন বাকহীন

নিঃশব্দ পথের দু-পাশে এঁটো হাতে হেমন্তের গাছ

বালির চিকচিক ডানায় কথা ফুরিয়েছে তার।


অন্ধকার এলে ডানায় গা জুড়োবে পাখির চাদর 

দেহাতি লালন অমলিন গান ছড়াবে

                সুনসান বাতাসের গায়ে।



 জীবনসত্য


জীবন যা হোক এঁদোগলি নয়

এসত্য জেনে, পাতারা ভেসে বেড়ায় ফটকে।

কানারোদে জেগে থাকে গোলাপি টান।

তুমি চেনা-অচেনায় হেঁটে বেড়াও

মাটির ঘড়ায় জল রেখে আবারও হাঁটো

এ-গলি সে-গলি পাথুরে নক্ষত্রে এত বিকিরণ

তুমিও ভাসো পাতার মতো গাছের মতো বৃষ্টিতে


আমি সাবালক ভূমি ছেড়ে এইমাত্র উঠে আসি পথে

পথ কিছুই বলে না

ক্ষত দেখিয়ে এগিয়ে দেয় বাণবিদ্ধ অগুনতি মোড়ে

যেখানে ট্রাফিক নেই, সিগন্যাল নেই

আঁকাচিহ্নে আমার ছায়া গেঁথে আছে। 



এই জনবিরলে


অজানার ভয়ে ভীরুপথ গাছতলা চেনে


সারসার বিন্দুটানা পথ পাশাপাশি কথা বলে

শ্যাওলাসিদ্ধ এই জনবিরলে কদাচিৎ কেউ হাঁটে

তারা ফিরেও আসে

আমি তাদের দেখি তাদের শুনি আর মুগ্ধ হই


ঘরের সবকিছু আমার চেনা, দিন-রাত অবসরের সঙ্গী।

অজানায় চলে যাওয়া মেয়েটির ছবি ফিরে আসে একদিন

পাড়াসুদ্ধ নির্ঘুম রাত থমকে যায় অচেনায়

অন্ধকারে জ্বলে ওঠে অগুনতি মুখ, বাক্সভর্তি পাষাণহৃদয়



চেনা নিক্কণ 


চলো হাতে তুলে রাখি কিছু সময়

নীরবতার ভেতর অসংখ্য প্লাবনঘাট ডেকে নেয় ওপারে

হৃদ্য কিছু যাপনও হয়তো জমা হয় ফেরিঘাটে

বৈঠা হাতে তুমি গুণগুণ কর জলের গান

মাছেরা দলবেঁধে ফিরে যায় স্রোতের অন্তরে


মাঠের ভেতরে সব, বাইরে এলে সারশূন্য চারদিক

কবচকুণ্ডল পরে যত তাপ নিতে পার হৃদয়ে

তাই গ্রাহ্য হবে, অম্লান ফেরি হবে বনবিজনে।


অশান্ত কিছু পল ছেড়ে দাও বাতাসে বাতাসে

তারা হাওয়া খাবে ভোরের নির্জন ঘাটে

নীরবতার পায়ে পায়ে খুঁজে পাবে চেনা নিক্কন।


HOME

SHARE THIS PAGE!