এখনো তোমায় ঘিরে
একসঙ্গে হাঁটাচলা, ওঠাবসা, রোদে ও শ্রাবণে
জ্যোৎস্নায় বসবাস, ঠিকমতো কবে থেকে
এখন আর মনে নেই।
আছে সারাক্ষণ, আমি ছাড়া আর একজন
অবিকল আমারই মতো, ক্রমাগত রোদে মেঘে
অবিরাম বৃষ্টির ভেতরে;
বাবার হাত ধরে শীতে ভোরবেলা
হলুদ সর্ষে ক্ষেতে, অশ্বিনী তোমার গায়ে
তামাকের পোড়াগন্ধ, মায়াবি শিশিরে ভেজা
পা তোমার, হুইসেল বাজিয়ে ট্রেন বেশ দূরে
গঙ্গাসাগরে, আশ্চর্য মিনারকোট,
লাক্সামে অপরাহ্নবেলা;
দিগন্ত পেরিয়ে পথ, ভাঙা স্বপ্নে পুকুরের পাড়ে
অনন্ত ঘুমের দেশে পিতামহী, ওঠো দুদু,
এ দুপুরে জেগে ওঠো, মাটির থালায় দেখো
কচু শাক, সোনা মুগ, কত ভোজ্য সাজানো হয়েছে,
হাহাকার মিলেমিশে আমাদের অহঙ্কার বেড়ে ওঠে,
উৎসব শেষ হয়ে গেলে রিহার্সালের পোশাক
বদলে যায় নিজের নিয়মে।
ফাল্গুনের ছুটির দুপুরে স্বপ্নের ডানা মেলা গহন নীরবতা,
খাঁ খাঁ শূন্য স্কুলঘরে কী রহস্য কারুকাজে ভরা,
তখনও তুমিই পাশে, দলকলসের ফুলে মাঠময়
শাদা নির্জনতা, দুইজনে হাত ধরে আবছা
নদীর কাছে দাঁড়াতাম।
ফিরিওয়ালাদের ডাক আজকাল হাওয়ায় ভাসেনা,
গেরুয়া বসনে কোনো ভাঙাচোরা মন্থর বাউল
আগের গ্রামের পাশে চলে যায়।
এখন শহর মত্ত, যাপনের উন্মাদনাময়
এখন উড়াল পুলে দিনরাত কাজ হয়
গাঢ় শব্দে কোলাহলে সারারাত ঘুমোতে পারি না,
আগে আগে শূন্যে হাঁটো অশরীরী
দোর ধরে তুমিই দাঁড়াও
মেঘে রোদে অবিরাম বৃষ্টির ভেতরে।
এই লেখাটা শেয়ার করুন