মুখোমুখি

ঈশানকোণ একটি সাহিত্যের ওয়েবজিন হেমন্ত সংখ্যা নভেম্বর ২০১৬ ইং 


[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]
নিভৃতে
কবি নকুল রায়ের সঙ্গে

[কবি নকুল রায়কে অনেকেই বিস্তারিত চেনেন। সত্তর দশকের শেষদিক থেকে শুরু করে  উনি কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ এবং উপন্যাস লিখছেন এবং এখনো অবিরাম লিখে চলেছেন। মূলত যদিও তিনি কবি, কিন্তু সবদিকেই তাঁর অবাধ বিচরণ। একসময় সীসার হরপের একটা ছাপাখানা চালাতেন। কালক্রমে এধরণের ছাপাখানার এখন অস্তিত্ব আর দেখিনা। লেখালেখির মাধ্যমে যা আয় হত, তা দিয়েই তিনি সংসার চালিয়েছেন। লেখা তাঁর নেশা আর পেশা। তবে আগরতলার মত ছোট্ট জায়গায় লিখে সংসার চালানো কেমন কঠিন ব্যাপার তা নকুল রায় ছাড়া আর কেউ জানে কিনা জানা নেই। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ছাব্বিশ।]

প্রঃ লেখালেখির শুরুটা কীভাবে ?
উঃ ১৯৫৯-৬০ হবে, পঞ্চম শ্রেণিতে। রামনগর ৪নং জে বি স্কুলের ছাত্র। অশোক স্যার জানালেন পরের শনিবারে সাহিত্যসভা হবে না (তখন প্রতি শনিবার সাহিত্যসভা হতো), বর্ডার সংলগ্ন ইটখলার ধারে excursion-এ যেতে হবে।
গেলাম। যে-যার অভিজ্ঞতা খাতায় লিখে সোমবারে জমা দিতে হবে আশোক স্যারের কাছে।
সেই প্রথম একটি গদ্যের জন্ম হয় – কী লিখেছিলাম, আজ মনে নেই। তবে ‘একটি গাছ খোলা মাঠে দিগন্তের দিকে হেলে আছে’ এ-ধরনের কিছু হবে হয়তো একটি বাক্য, যা অশোক স্যার আমার পিঠে মৃদু চাপ দিয়ে সকল ছাত্রছাত্রীদের সামনে বাহবা দিয়েছিলেন।
আর কবিতার জন্ম ? সে তো ১৯৬২ সালে যখন চিন-ভারতের যুদ্ধ শুরু হয় এবং শেষ হয়ে যায় দ্রুত। ৮ লাইনে যুদ্ধ বিষয়ক মাত্রাবৃত্তে একটি কবিতা লিখে কোনো এক শনিবার পাঠ করি। ৪নং রামনগর স্কুলের ইতিহাসে এই প্রথম স্বরচিত কবিতা এবং আমার জীবনেও।
তাছাড়াও, লেখা-দেখা-অনুভবের যোগ চলে ভেতরে; এর কোনো সঠিক দিন-তারিখ জানা থাকে না, প্রকাশ ঘটে মাত্র কোনো এক সময়, কিন্তু প্রস্তুতি তৈরিতে সাব-কনসাস্ বা অবচেতনক্রিয়া সর্বদাই সব লেখকদের পূর্বসূত্র হিসেবে কাজ করে। আর বাস্তবতার সংঘাতে, দ্বন্দ্বে লেখার ইচ্ছে থাকলে লেখার জন্ম হয়।
এভাবে শুরু হয়েছে।

প্রঃ নিজেকে নিয়ে কী ভাবেন ?
ঊঃ এখন, এই ৬৮ বছরের প্রায় শেষ; আগামী ১৯শে নভেম্বর ৬৯ বছরে পড়ব। এখনও, যেহেতু একটিও ক্লাসিক লেখা লিখতে পারিনি, তার সন্ধানে আছি। প্রতিদিন ভাবি, ভাবার অভ্যেসের ভেতর বেঁচে থাকি। একজন ব্যর্থ কৃষক আমাকে একান্তে জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘জীবনে সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস বা বিষয় কী?’ আমি কিছুমাত্র চিন্তা না করে উত্তরে জানালাম ‘বেঁচে থাকাই আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান, তা যতই বারবার ব্যর্থতায় আসুক না কেন’।
তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন ‘ব্যর্থতায় ক্লান্ত হতে হতে যদি জীবন ফুরিয়ে যায়, তখন ?
বললাম ‘ফুরিয়ে যাবার আগে শেষবারের মতো জ্বলে উঠতে হবে; কারণ আমার চারিদিকে বা পরিবারে বা সমাজে যেসকল মানুষেরা তখনও বাস করছে, তাদের কাছে আমার এই জ্বলে ওঠার মোক্ষম অস্ত্র একটাই --- সমস্ত প্রতিকূলতার ভেতরও আমার সততায় কোনো ফাঁকি ছিল না, তার দৃষ্টান্ত হিসেবেও আমি জ্বলে উঠতে চাই’।
তাই আমি সারাক্ষণ ভাবি। ভাবাই আমার নিত্যদিনের কাজ।


প্রঃ কী লিখেন এবং কেন লিখেন ?
উঃ কী লিখি --- এই প্রশ্নটির আগে আসে সেই মোক্ষম প্রশ্ন --- কেন লিখি। কেন লিখি? আমি না-লিখলে আপনি জানবেন কী করে যে আমি কেন লিখি, কী লিখি ?
যে তাড়নায় শব্দগুলো বাক্যে ভিড় করে, তাদের ছাড়া (শব্দগুলোর) আলাদা কোনো অস্তিত্ব নেই আমার বক্তব্যের। একটি কবিতা যদি উৎকৃষ্ট হয়, তবে সেই কবিতাটির কোনো বিকল্প শিল্প হয় না; না-কোনো উপন্যাস, না-কোনো গল্প, না-কোনো নাটকে সেই কবিতাটির যমজ সন্তান খুঁজে পাওয়া যাবে না। কবিতা যখন লিখি তখন কবিতাই থাকে; কারণ কবিতা একমাত্র এমন জীবনশিল্প যার কোনো কারখানা নেই ক্লাস নেই এমনকি নিয়মিত ছাত্র পড়িয়ে ছাত্রদের কবিতা গিলিয়ে তাদের দ্বারা কবিতা-শিল্প সৃষ্টি করানো সম্ভব নয়। এ হল ভেতরের এমন এক অবারিত দরজার শব্দ যেখান থেকে মানুষের প্রবেশ ও প্রস্থান অতিসহজে ধরা পড়ে জাতকবিদের কাছে। তখন, সেইসব তাড়নায় শব্দগুলো বাক্যে ভিড় করে কবির কাছে। তখন তো লেখা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো রাস্তা আমার জানা নেই;
তাই লিখি।
এবং এসবই লিখি – বিরাটের ভেতর অতিক্ষুদ্র হলেও অন্তঃকরণের দিকে মুখ রাখলে যা মহৎ বলে মনে হয়।

প্রঃ জীবনের সাফল্য কিংবা ক্ষোভ, এ-বিষয়ে কবির ভাবনা এবং নিজস্ব বক্তব্য।
উঃ এতক্ষণ ধরে নিজস্ব বক্তব্যই বললাম।
‘জীবনের সাফল্য কিংবা ক্ষোভ, এ-বিষয়ে কবির ভাবনা’ কথাগুলোর প্রকৃত মানে কী বুঝলাম না। এই প্রশ্নটাই বিভ্রান্তিকর। জীবনের সাফল্য এক ধরনের আপেক্ষিক বিষয়, কেঊ বহূভোগী সামান্যতে অরুচি; কারোর সাধারণ জীবনযাত্রা খুবই পছন্দ এবং মেরুদণ্ড বিক্রি করার সনয় যদি কোনো মানুষ নিজেকে সাধু কিংবা সৎ বা সতী ভাবতে শুরু করে, এবং যথাযথ প্রাপ্তিযোগ নাহলে ক্ষোভ চলে আসে ব্যবহারিক জীবনে, তাহলে তার কবিতা লেখাও ছাইপাঁশ হবে, সে কবির নিজস্ব বক্তব্য যারা খুঁজতে চায় তারা আরেক ধরনের প্রতারণার আশ্রয় করবে – এই প্রশ্নটাই অযথার্থ মনে হয়েছে।

প্রঃ মডার্ন, পোস্ট-মডার্ন, আফটার মডার্নিজম, নিও মডার্ন --- এভাবে কি সাহিত্যকে ভাগ করা যায়?
উঃ মহাভারতকে নিয়ে বিশেষ করে কয়েকটি প্রধান ও মুখ্য চরিত্রদের নিয়ে কবি বুদ্ধদেব বসু একটি ক্লাসিক গদ্যের বই ‘মহাভারতের কথা’ লিখেছেন সেই কবে --- আমি সাতের দশকের শেষদিকে পড়েছিলাম। সেই বইটি আগামী ১০০ বছর পরেও আধুনিক গদ্যের বই হিসেবে চিহ্নিত হতে থাকবে --- তখনও বহুবার পণ্ডিতম্মন্য যারা সংসারে বিরাজ করবেন, তারা বলে যাবেন এই কুতর্ক-শব্দগুলি --- মডার্ন, পোস্ট-মডার্ন ……
যে সাহিত্য যুগ যুগ ধরে টিকে থাকে, টিকে আছে --- তাই আধুনিক। আধুনিকীকরণে যাদের মুদ্রাদোষ প্রকট তারা যদি প্রতিভাশালী সৃষ্টির দোসর হন, তবে তো ভালোই, অন্তত সেই বিখ্যাত উক্তি আইনস্টাইনের ‘সত্য জানতে-পাওয়ার চেয়ে সত্যের অনুসন্ধানই শ্রেয়’। সাত্রে বলেছেন ‘সাহিত্যের সত্য বাস্তবের সত্যের চেয়ে অনেক ভিন্ন’।
কাজেই এই কু-তর্কের চেয়ে, আপনার নিজস্ব সৃষ্টি যতই স্থূল হোক, তাই নিয়ে অনবরত পড়ে থাকুন; একটি সূক্ষ্মতার ইঙ্গিত আপনি অবশ্যই তখন নিজের জীবনেই খুঁজে পাবেন যা আপনার কাছে আধুনিক-বোধ বলে মনে হবে।

প্রঃ নতুন লেখক প্রসঙ্গে বক্তব্য কী?
উঃ নতুন চিরকাল স্বাগতমেষু; তাদের লেখা যেদিন সৃষ্টি হবে না, সেদিনটিই হবে মানবপ্রজন্মের সমাধিস্থল। আমি যে অনন্তের ভেতর কতবার ‘আমি’র ভেতর দিয়ে নতুন হয়ে এসেছি তার প্রমাণই আমির বাস্তবতা। বহু জিনের ধারাবাহিকতায় আজকের লেখকেরা যে নতুনভাবে তাদের সৃষ্টির ডালি সাজিয়ে ধরেছে --- সেই ডাল থেকেই লেখকের জন্ম। লেখক একই সঙ্গে পাঠক এবং লেখক।
আমি কী লিখছি তার পরিমাপযোগ্যতা, তার তুলনা-বিচার হয় নতুন লেখকদের হাতে। আমার লেখার স্থায়িত্ব ঘটে নতুন পাঠকদের সৃষ্টিবোধের ভেতর দিয়ে। অচল লেখাগুলো নতুনের সৃষ্টির দাপটে মুছে গেলে বুঝতে হবে যে, লেখার অসারতা দিয়ে জগতে পাঠক-পাঠিকার মন ভোলানো বা মনে দাগ কাটা কোনোকালেই সম্ভব নয়। সুতরাং নতুন আসবেই চিরকাল তার তীক্ষ্ণ তরবারীসুলভ কলম হাতে নিয়েই। সৃষ্টির সাধনা তাই চিরকালীন আধুনিক।

প্রঃ কবিতালেখা কি মস্তিষ্কজাত এক ভাবনাপ্রকাশ, কবির যাপন-অভিজ্ঞতালব্ধ এক স্বগতোক্তি ?
উঃ হ্যাঁ, অনেকটাই soliloquy, স্বগতোক্তি। এই স্বগতোক্তি শুধু নাটকে অভিনয়েই নয়, বেঁচে থাকার এক আত্মগত সংলাপ যা কাউকে কোনো ব্যক্তির উদ্দেশে না-উক্তি করেও নিজের সঙ্গে নিজের সংলাপ --- এটা বাইরে থেকে অনভিজ্ঞরা পাগলামো মনে করতে পারে।
কবিতা লেখার সময় পরের লাইনগুলো কী হবে, তা অবশ্যই কোনো বিজ্ঞানী এখনও আবিষ্কার করতে পারেননি। বিজ্ঞানীরাই বলেছেন, মানুষের অন্তরের কথা, মস্তিষ্কের সার্বিক মেধাসত্তা এখনও আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। কারণ, মানুষের শ্রেষ্ঠতার ভেতর পূর্ণতার ভেতর ‘সম্পূর্ণ’ শব্দটির অর্থই এখন পর্যন্ত মানুষ আবিষ্কার করতে পারেনি।
সম্ভবত, ক্রমপর্যায়ে জিনগত আগমনের ভেতরে আজকের দিনে অসম্ভবভাবে দ্রুতহারে কম্পিউটার-বিজ্ঞানের জয়যাত্রা থাকা সত্ত্বেও – কোনো মানুষের পক্ষেই কবি তৈরি করা যায় না; কবির জন্ম হয় কবিতা সৃষ্টির জন্যে; এবং তা কোনো অবস্থাতেই কোনো গবেষণাগারে কবি তৈরির ফর্মুলা তৈরি করার পদ্ধতি এজগতে যদ্দিন মানুষ থাকবে – সম্ভবপর হবেনা, তা আমি নিশ্চিত।
অন্তঃকরণের সঙ্গে নিয়ত, নিরবচ্ছিন্নভাবে, continuously এক সাঁকো বা linkroad অনুশীলনযোগ্য পদ্ধতি থেকে যায় কবির মস্তিষ্কে। যেটা যে যত ধরতে পারে তার আবেগ-কল্পনা তত বেশি জাগ্রত থাকে। এই কল্পনার প্রতিভা যাদের জন্মগত তাদের কবিতা ধারণ ক্ষমতা তত বেশি জাগ্রত। যারা সাধারণ স্তরে সাধারণ পর্যায়ে, কম অভিজ্ঞতায় শব্দ ব্যবহার করে কবিতার শরীর থেকে কিছু আদায় করতে চায়; তারা কালক্রমে স্তিমিত হয়ে পড়ে; একসময় কবিতা যে লিখেছেন এতদিন, তার কোনো চিহ্নই কালের পাঠকের অন্তরে দাগ কাটে না।
তাই জীবনানন্দ ঠিক কথাই বলেছেন তাঁর কল্পনাপ্রতিভার শক্তিতেই যে ‘সকলেই কবি নন কেউ কেউ কবি’।

প্রঃ কবিতা লেখাটা কি খুব জরুরি এসময়ে ?
উঃ একশোবার, হাজারবার, লক্ষবার জরুরি। কারণ, কোনো সময়েই কবিতা লেখার সময় নয় --- এ-কথাটা বলার মতো কোনো মানুষ যদি বেশি বেশি থাকে সংসারে; তাহলে এই জগৎ শুধু রোবট পরিচালিত হতে বাধ্য।
আকাশ-মাটির সংযোগ বেশি বেশি তাড়িত করে, তাদের বন্দি করার অধিকার কারুর নেই। পৃথিবীতে এ সময়েই কবিতা লেখার মোক্ষম সময়। প্রতিবাদী এবং বিবেকসমৃদ্ধ হার্দিক ভাষার জন্ম বহু পুরনো, আজও তা অব্যাহত। তাই উৎকৃষ্ট কবিতা চিরকালের।

প্রঃ ‘কবিতা অধিক জরুরিবার্তা’ এ পৃথিবীতে; বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আর নাই তেমন কোনো জরুরি সংলাপ – যা দুনিয়া বদলে দিতে জানে। আপনি মানেন?
উঃ ভালো কথা। এ প্রসঙ্গে একটা আরবী প্রবাদবাক্য বলি ‘আলজিভ নেই সেইসব কবিদের যারা মন্ত্রীর গা ঘেঁসে হাঁটে’।
কী বুঝলেন ! এইসবের সহমত লাইনও আজকের দামাস্কাস, সিরিয়ায়, প্যালেস্টাইনের কবিরা লিখছেন, লিখতে সাহস পাচ্ছেন।
সুতরাং, পৃথিবী বদলানোর আগে নিজেকে বদলাতে বদলাতে মস্তিষ্কে বিপ্লব ঘটাতে হয় আগে। মানবতার ধর্ম বজায় রাখার চেয়ে বড়ো বিপ্লবসাধনা পৃথিবীতে আর নেই। কবিরা অবশ্যই এর হৃৎপিণ্ডে বসবাস করেন।

প্রঃ কার জন্য, কীসের জন্য কবির মন কবিতা লেখায়, কবিতা-যাপনে সারাটা জীবন ব্যয় করেন ?
উঃ কবি জন্মায় তার কবিমন নিয়েই। বিশ্বখ্যাত লেখক ল্যু সুন বলেছেন ‘যে-সমাজ প্রতিভা জন্ম দিতে ভয় পায়, সেই সমাজকে ধিক্’!
সারাটা জীবন বলতে কী বোঝায়!
আমি এই পৃথিবীতে কোটি-কোটিবার কবি হয়ে জন্মাতে চাই। কারণ ?
কারণ হল, কবিতা লিখে অর্থ-বিত্ত আসেনা; আসে চিত্তসুখ। এ-এমন চিদাত্মাসুখ যে তার কোনো বিনিময় মাধ্যম নেই, পরস্ব-অপহরণের স্পৃহা নেই, ব্যাঙ্ক লুট করার বাসনা নেই, মৌলবাদিতা নেই; নেই পৃথিবীকে পৃথিবীর সমস্ত সম্পদে আগুন ধরিয়ে মানব প্রজাতিকে ধ্বংস করার বাসনা। কবিরা আর্থিকভাবে দরিদ্র হতে পারে, কিন্তু সাধুতার সঙ্গে হৃদয়বৃত্তি-প্রবৃত্তি মেশানোর প্রতিভা আর কোনো শব্দ-প্রকৌশলীদের জানা নেই।
জীবন একটি অনিবার্য কনটিনিউয়াস স্রোত। তার সম্পূর্ণতা জানার চেয়ে তার খণ্ডাংশ ব্যবহারেই সবচেয়ে বেশি সার্থকতা দান করেন কবিরা। সুতরাং জীবনধর্মে কবিরা স্বনামধন্য জায়গায় বসবাস করেন বলে, তাঁরা নমস্য।

প্রঃ কবিতাই কি শেষকথা --- পৃথিবীর লেখালেখির জগতে?
উঃ মানুষের অনেক কিছুই তো শেষ থেকে শুরু হয়। কেউ যদি মনে করেন পৃথিবীর যাবতীয় জঞ্জাল লেখার ভেতর তার কবিতাগুলির কয়েকটি বহুকাল টিকে থাকবে, আর সবই মৃত, ফসিল – তা ভেবে যদি কোনো কবি আত্মতৃপ্তিতে ভোগেন, তাহলে তার চিৎকার তার হৃদয়ই শুনবে, আর কেউ না।
                                                                                                     HOME

এই লেখাটা শেয়ার করুন