ঘুমে জাগরণে
কল্যাণব্রত চক্রবর্তী
ভালো খবর আসবে ভেবে আটকে রেখেছি
শুধু অন্ধ নির্ভরতায়,
শেষ অবধি ধর্মঘট পেরিয়ে চিঠি আসবেই
কত বলেছি। আমি ঘুমিয়ে গেলে শব্দ করে
হাঁটো আমার ঘরে, আমি বাইরের হাবভাবে
আর পাঁচ জনের মতো, ভেতরে
ভেতরে আর্ত প্রস্রবণের শব্দের টং টাং,
যা পাওয়া বাকি তাই নিয়ে অবরোধ,
উৎসর্গ আর শেষ হতে চায় না
সাজিয়ে দিতে মাঝে মাঝে বেলা হয়ে যায়,
আমার যে অঢেল সময়, তাও,
জেগে আছো জেনেই চৌকাঠের ওপাশে
কিছু রেখে আসা মৃদু আয়োজন
যখন আসার সময় হবে আমি হয়ত
থাকবো না, আশ্বিন ছাড়িয়ে আমি
নদীর ওপারে চলে যাবো, নদীতীরে
দুঃখীদের ঘরবাড়ি, ব্রীজ পেরিয়ে
তখনও আঁধার নীরবতা,
আমি হঠাৎ জেগে উঠি, শীত লাগছে।
অনন্ত সময় একটা বোধ, যা শুধু কবিকে মানায়।
অন্তহীনের কথা ভেবে আজ রাত্রে নীচের দালানে
আমি নেমে যাবো, যে ভাবে প্রস্তুত থাকে
ফেরার সময় অচেতন প্রশ্নকাতরতা
জাগো হে কিন্নরগ্রন্থি, রাত হ’ল
পেছনে দীঘির জলে নীরবতা।
এতদিন পরে
কল্যাণব্রত চক্রবর্তী
যুদ্ধশেষ ভেবেছিলে তুলে নেবে রুপোলি পতাকা, স্থির বীজের
গর্ভে অন্ধকার রাত সীমানায়, ফসলের মাঠময় বিদ্যুতের তার
ছিঁড়ে পড়ে আছে; মসৃণ পাহাড়ি গ্রামে দৃষ্টিহীন নিজেও
অশ্রুত মেঘের দিকে হাত তোলে।
ভেবেছিলে যুদ্ধশেষ অতিকায় মূর্ছিত জানায় সব কিছু
আস্তে আস্তে ঢাকা পড়ে যায়, মানুষের মুক্তি এতো
সহজ নিষ্পাপ ধরে নেয়া কতো ভুল ও আপোষ
প্রতিপদে যাজকেরা উৎসবের মহিমা বুঝেছে;
এতোদিন বাদে স্বাধীনতা, মা এখন সদ্যোজাত শিশু
বুকে শধু পথ চেয়ে বসে আছে হাসপাতালে,
বাড়ি থেকে নিয়ে যেতে কেউ আর আসেনা।
আর কেউ
কল্যাণব্রত চক্রবর্তী
রুপোর টাকা মাটির ভেতর লুকিয়ে রাখলে
কালো হয়ে যায়, ভেতরে হেঁটে বুঝেছি
কেউ বুঝতে চায় না।
নিশুতি আকাশের তলায় নির্জন ঘরে
আমি শুয়েছিলাম সারা রাত
একটা বিশাল গাছ থেকে ফোটা ফোটা
জল পড়েছিল সারা সময়,
কেউ আর গোলাপ হয়ে ফোটেনি।
এই লেখাটা শেয়ার করুন