drag and drop website builder software

[ঈশানকোণ নতুন সংখ্যা দেখার জন্যে এখানে ক্লিক করুন]


কবিতা            Home       
সন্তোষ রায়ের ছটি কবিতা


দেবীর দুয়ার

উৎসবের কিনারায় আছি
সমুখে আলপনা
দূরের ঘাসে কুয়াশা পড়েছে
না-ডুবে এসব দেখি না
লতায় বেঁধেছে সব চন্দ্রসূর্যতারা 

অনেক দিনের পর এটুকু ভাবনা আছে 
প্রতিটি যুদ্ধ শেষে যেমন উৎসব আসে
রক্তবীজ ঢাকা পড়ে আবিরের তলে

তুমি তো উৎসব মুখর
যে করে হোক ছুটে আসো প্রাঙ্গণে
গজে নয়তো দোলায় নয়তো নৌকোয় চড়ে
তোমার নামেই গাঁয়ের নাম ‘দেবীর দুয়ার’।


ফ্লাইওভার

স্নায়ুসহ ঝুলে পড়ছে একটু একটু করে ।
পিক্‌আওয়ারে ছিঁড়ে পড়ে যদি – থ্যাৎলে যাবে
পথের ছবি ।

এইসময় দিল্লির দিকে ছুটে যাচ্ছে অনেক স্রোত ।
দিল্লি কেবল দিল্লি নয় – সারা ভারতের ।
বিহার আমার নয় অথচ সারা ভারতের !
মুম্বাই আমার নয় অথচ ভারত আমার !
মণিপুর আমার নয় অথচ ভারতের !
নাগাল্যান্ড আমার নয় অথচ আমি ভারতীয় !

কষ্ট জমে জমে ঝুলে পড়ছে একটু একটু করে ।
নির্মাতা জানেন, কোথায় জল চোখ বুজে আছে

নদী থেকে নদী, সময় থেকে সময়, দেশ থেকে দেশে
যাবার পথ ঝুলে পড়েছে একটু একটু করে ।

যদি পারো, বাঁধো, -- অনেক দৃশ্য ভরা চোখ –
ছিঁড়ে গেলে অন্ধ হবে দেশ ।


ইহলোকের ইস্‌কুল

দরোজা জানালা নেই, নেই দেয়াল
শুধু হাওয়ার ভেতর এক কক্ষ আছে ।
নাম নেই ছেলেদের নাম ডাকি
খিদে নেই তবু খাওয়াই
মন নেই, তবু মন দিয়ে পড়াই

এমন একটি স্কুল – ঘন্টি বাজে নীরবে
চোখের ভেতর ব্ল্যাকবোর্ড । হাওয়া এলে শুকনো পাতায়
ঢেকে যায় সব – বর্ষায় শুরু হয় নতুন চাষ । 

কী নাম ছিল তার ?
কী নাম তার ?
কা’রা আসে, কা’রা যায় ?

মেঘ সরে গেলে দেখা যায় পায়ের ছাপ,
পিঁপড়ে ঠেলে তুলে মাটি ও আতরের ঘ্রাণ
মাঝে মাঝে পাঠ ভুলে দাঁড়াই
চারপাশে নীরব কবরস্থান ।



ভালবাসা

আমি ভালবাসি যাকে, তুমিও ভালবাসো তাকে
আমি বিয়ে করেছি যাকে; তুমি এসে ঘুরঘুর করো সাত-চৌদ্দবার ।
ভালকথা – ভালবাসো, বিয়ে কর, উৎপাদন কর ভালবাসা ।

দ্রৌপদী এক শব্দমাত্র – সকল কবি ভালবেসে বিয়ে করে তাকে ।
বিয়ে এক শব্দমাত্র – তুমিও রোপণ কর নাভিমূলে –
উৎপাদিত হবো – আমি ও আমার কবিতা ।

বেহুলা এক কবিতামাত্র – সকল কবি পেতে চায় একবার,
সকল কবি ঘুমের শেষে জাগতে চায় পুনর্বার ।


সুন্দর

সুন্দরকে খুঁজতে গিয়ে দেখা পাই সুন্দরীর ।  
কলেজ রোড-রেস্তোঁরা-পার্ক-সিটিবাস যেখানেই যাই.....
বাংলা নামের গায়ে টপ-প্যান্ট
কখনো বিদেশী নামে প্যাঁচানো শাড়ি
ভাল লাগে ক্যাট-ওয়াকে ।
একাদশী-দ্বাদশী গুটি পায়ে হেঁটে যায় ষোড়শী র্‌অ্যাম্পে । 

গ্রামের আমিনাও হাঁটে সবুজ আলে
হাঁটুর ওপর শাড়ি ভারসাম্য রাখে
বাঁশঝাড়-কবরস্থান-কুয়োতলা যেখানেই যাই......

সুন্দরকে খুঁজতে গিয়ে দেখা পাই সুন্দরীর ।


নব-আনন্দ

গোড়ালি ঘিরে গাছ । গাছ বুকের নিচে ছাতা মেলেছে ।
মাথার ওপর মেঘ, গর্ভবতী শুয়ে আছেন ভাসমান মেঘে ।
প্রসূতির ব্যথা চমকে চমকে জ্বলে-নেভে ।
গোঙানি ওঠে – এই বুঝি ভাঙল জল, ভাঙল জল।

এই জল পান করে ফলসম্ভবা
এই জল পান করে নদী-মৃত্তিকা
এই জলে চাষিবৌ বহুফসলা ।


                                                  HOME

[এই লেখাটা শেয়ার করুন]